কৃষি খাতকে দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে পতিত আ.লীগ সরকার: পাবনায় মামুনুর রশিদ খান

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কেন্দ্রীয় প্যাকেজিং হাউজ প্রকল্পের ছয় তলা ভবন নির্মান করেই আওয়ামী পন্থী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাত করেছিল। সুবিধা বঞ্চিত কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের চারা রোপনের রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, কম্বাইন্ড হারভেস্টার, বালাইনাশক, সার ইত্যাদি কৃষকদের দেওয়া হলেও গত পনের বছরে আ.লীগের নেতাকর্মী ছাড়া কেউ পায়নি। ফলে এ খাতকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মামুনুর রশিদ খান।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে সারা দেশে ৩ মাস ব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশের অংশ হিসেবে পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া গরুর হাট মাঠে কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০২২ সালে সেচের পানি না পেয়ে রাজশাহীতে রবি ও অভিনাথ মাড়ান্তি আত্মহত্যা করেন। সেচ পাম্প স্থাপনে স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীদের ফসলের জমিতে ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে আত্মহত্যা করেন শেরপুরের নালিতা বাড়ীর শফিউদ্দিন নামের আরেক কৃষক। বর্তমান অর্থ বছরে কৃষি বিষয়ক পাঁচটি মন্ত্রণায়ণয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৭৩২২ কোটি মোট বরাদ্দের ৫.৯ শতাংশ। এটা খুবই অপ্রতুল। অথচ ২০১১-১২ সালে উক্ত খাতে বরাদ্দ  ছিল ১০.৬৫ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সংশোধিত বাজেট কৃষি খাতে ভর্তুকীর পরিমান ছিল ২৫০০ কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরের ভর্তুকির পরিমান ১৭২৬১ কোটি টাকা যা আগের বছরের তুলনায় ৮৩৮৩ কোটি টাকা কম। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের নজীরবিহীন লুটপাট এবং দুর্নীতির কারণে জার্মানী থেকে প্রকাশিত গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৪ বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রথম সারির খাদ্য নিরাপত্তাহীন ১০টি দেশের মধ্যে অষ্টম স্থানে রেখেছে।


কৃষি খাতে জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশেষ কৃষি লোন প্রনয়ণ, কৃষি সংস্কার কর্মসূচি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ, পল্লীবিদ্যুতায়ন কর্মসূচি, বিসিআইসি প্রতিষ্ঠা, চিনি শিল্প উন্নয়নে নীতিমালা,  কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করাসহ যাবতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছিলেন। কৃষিখাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ব্যাপক অবদান রেখেছিলেন। আগামীতে তারেক রহমান দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে কৃষকদের সার্থ সংশ্লিষ্ট কাজ করবে বলে জানান তিনি।

এসময় কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধান অতিথি। টেবুনিয়া কৃষিফার্ম এলাকায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান স্থানীয়রা।

মালিগাছা ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক, পাবনা পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ড্যাব পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আহমেদ মোস্তফা নোমান, বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষক দলের সভাপতি আবুল হাসেম, সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসিফ, যুগ্ম-সম্পাদক আহসানুল হক মুন্না ও সদর উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি হাবিবুর রহমান বাচ্চু প্রমুখ।